eaibanglai
Homeএই বাংলায়ন্যাশনাল চিলড্রেন্স সায়েন্স কংগ্রেসের আয়োজনে ডি.এ.ভি.মডেল স্কুল, দুর্গাপুর

ন্যাশনাল চিলড্রেন্স সায়েন্স কংগ্রেসের আয়োজনে ডি.এ.ভি.মডেল স্কুল, দুর্গাপুর

স্টাফ রিপোর্ট, দুর্গাপুরঃ- ২৬ শে সেপ্টেম্বর ২০২২ জেলা স্তরের ৩০ তম “ন্যাশনাল চিলড্রেন্স সায়েন্স কংগ্রেস” আয়োজিত হলো ডিএভি মডেল স্কুল দুর্গাপুরে। এই কার্যক্রমটি সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ও বায়োটেকনোলজি (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকার)- এই দুই বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার রাজ্য সরকার অনুমোদিত স্কুল ছাড়াও সি বি এস ই , আই সি এস সি বোর্ড অনুমোদিত স্কুল এবং বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (বিবেকানন্দ বিকাশ পরিষদ) অংশগ্রহণ করে। এই প্রদর্শনীতে মোট ১৭টি স্কুলের প্রায় ২১০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। প্রদর্শনীতে ৮৫ টি প্রকল্প নির্বাচিত হয়। ১০ থেকে ১৪ বছরের শিক্ষার্থীদের ৪২ টি প্রকল্প এবং ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ৪৩ টি প্রকল্প প্রদর্শিত হয় । ছয় থেকে আট বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের মোট ২৯ টি পোস্টার এবং ৯ থেকে ১১ বছরের শিক্ষার্থীদের ১৩ টি মডেল এই প্রদর্শনীতে স্থান পায়। প্রতিযোগিতায় প্রকল্পগুলির শ্রেষ্ঠত্ব বিচারের মাপকাঠি ছিল বিষয়বস্তু নির্বাচন, পদ্ধতি, ফলাফল ও ভবিষ্যতে এর প্রয়োজনীয়তার ওপর। এই দিন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন শ্রী সৌরভ চ্যাটার্জী WBCS (exe) SDM, দুর্গাপুর। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডঃ পার্থ ভট্টাচার্য (চিফ সায়েন্টিস্ট, ইনফরমেশন টেকনোলজি, CSIR, CMERI, দুর্গাপুর)। তিনি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে উচ্চতর শিক্ষা এবং গবেষণা করার জন্য উৎসাহিত করেন। তিনি একথাও বলেন যে, সারা বিশ্ব যে এদেশের নতুন প্রতিভার দিকে তাকিয়ে আছে। এদিনের অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রী দীপ্তিময় দাস (ডিস্ট্রিক্ট প্ল্যানিং অফিসার, পশ্চিম বর্ধমান), বাঁশরী গুহ (স্টেট কো-অর্ডিনেটর NCSC, W. B.), শ্রী অমিয় কুমার কালীদহ (সিনিয়র সায়িন্টিফিক অফিসার, ডিপার্টমেন্ট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি), শ্রী অভিজিৎ বর্ধন (সেক্রেটারি, সায়েন্স কমিউনিকেশন ফোরাম, এন সি এস সি ২০২২) এবং শ্রীমতি বকুল মণ্ডল (কর্মাধ্যক্ষ, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ)। এছাড়াও অতিথি-আসন অলংকৃত করেছিলেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষক মহাশয় ও মহাশয়াগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সন্মানীয় অতিথিদের তিলক পরিয়ে একটি চারাগাছ প্রদান করে বরণ করে নেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও রিজিওনাল অফিসার এবং ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর পাপিয়া মুখার্জি তাঁর স্বাগত ভাষণে উপস্থিত সকল অতিথি, শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা জানান। জাতীয় শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন যে সভ্যতার রথ থেমে নেই। বিজ্ঞানের অবদান জীবনের সর্বত্রই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সাথী করে সে আজ সর্বত্র তার বিজয় পতাকা প্রোথিত করে চলেছে। শিশুরা স্বভাব কৌতূহলী । তাই তাদের বিজ্ঞান মনস্কতা, উদ্ভাবনী চিন্তা দেশ ও জাতির সম্পদ। তার সংরক্ষণের প্রয়োজন আছে। ক্ষুদে প্রতিভার মর্যাদা দিয়ে তিনি বলেন আসলে সকল অংশগ্রহণকারীই গবেষক বা বৈজ্ঞানিক। আজ প্রত্যেকেই বিজয়ী। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য আরো বেশি করে এই ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে বলেন। তিনি বলেন হয়তো তাদের মধ্যেই সুপ্তাবস্থায় রয়েছে ভবিষ্যতের বিশ্বজয়ী গবেষক বা বৈজ্ঞানিক। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রিত ছিলেন ডঃ অমিত গাঙ্গুলী মহাশয় (সিনিয়র প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট, CMERI)। তিনি তাঁর ভাষণের মধ্যে দিয়ে কিভাবে নানা ধরণের বর্জ্য পদার্থকে পুনর্ব্যবহার করা যেতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। সে প্রসঙ্গেই শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার জন্য তিনি zero waste colony এর কথা বলেন। তারপর প্রফেসর পথিক কুম্ভকার মহাশয় (পদার্থবিদ্যা বিভাগ NIT, দুর্গাপুর) তাঁর ভাষণে লেজার লাইট এবং তার ব্যবহারের প্রসঙ্গে নানা কথা বলেন। কীভাবে প্রতিদিনের জীবনচর্যায় আমরা তার প্রয়োগ করতে পারি সে বিষয়ে তার মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি ন্যানোটেকনোলজির ব্যবহারের কথাও বলেন। তারপর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হয়। পোস্টার তৈরি প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে ডি.এ.ভি.মডেল স্কুল, দুর্গাপুরের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র দেবমাল্য রায়, দ্বিতীয় হয় ডি.এ.ভি. পাবলিক স্কুল, ডি ভি সি, এম টি পি এস -এর সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী শ্বেতা কুমারী এবং তৃতীয় হয় মণীষা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নবাব মন্ডল। মডেল এক্সিবিশনে প্রথম হয়েছে ডি.এ.ভি.মডেল স্কুল, দুর্গাপুরের দুই ছাত্র স্পন্দন ও তনুশ, দ্বিতীয় হয়েছে মণীষা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী অণ্বেষা ব্যানার্জী ও বাসব রায়, এবং তৃতীয় হয়েছে ডি.এ.ভি. পাবলিক স্কুল, পাণ্ডবেশ্বরের দুই ছাত্রী অস্মী রায় ও ঈপ্সিতা দত্ত। প্রথম তিন স্থানাধিকারীকে পুরস্কার স্বরূপ নগদ অর্থ দেওয়া হয়। প্রথম পুরস্কার ১২৫০ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৭৫০টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ৫০০ টাকা। অনুষ্ঠানের শেষে বিদ্যালয়ের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক শ্রীমতি গীতালি মুখার্জী উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানের শুভ সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments