eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুরে একই নম্বরের দুটি পুলকার আটক, দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা

দুর্গাপুরে একই নম্বরের দুটি পুলকার আটক, দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা

নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– পুলকার নিয়ে অভিভাবকদের আশঙ্কা নতুন নয়। ভোর ভোর ঘুম থেকে উঠে কচিকাঁচাদের স্কুলের জন্য তৈরি করে দুরুদুরু বুকে পুলকারে তুলে দেন তাঁরা। এরপর যতক্ষণ না পড়ুয়ারা স্কুলে পৌঁছয়, ততক্ষণ নাড়ির গতি স্বাভাবিক হয় না অভিভাবকদের । স্কুলে পৌঁছনোর পরে কয়েক ঘণ্টার স্বস্তি। তারপর ফের পড়ুায়ারা বাড়ি ফেরা না পর্যন্ত দুঃশ্চিন্তা। সোমবার এই দুঃশ্চিন্তা আরও খানিকটা বেড়ে গেলে দুর্গাপুরের অভিভাবকদের। কারণ এদিন দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর ডিএভি মডেল স্কুলের সামনে ধরা পড়ল একই নম্বরের দুটি পুলকার।

জানা গেছে এদিন সকালে শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলের সামনে ভীড় জমায় বহু পুলকার। তারই মধ্যে বাঁকুড়া জেলার নম্বর প্লেট লাগানো দুটি পুলকার নজরে আসে অনেকেরই। সাদা রঙের (টাটা ম্যাজিক) গাড়ি দুটি প্রায় একই রকম দেখতে এবং তাদের নম্বর প্লেটও (ডাবলুবি ৬৮পি ৫৭০৯ ) হুবহু এক। দুটি গাড়িতেই বড় বড় করে লেখা ডিএভি স্কুল। দুর্গাপুর বি-জোন থানার পুলিশ খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ টহলরত একটি পুলিশ গাড়ি ঘটনাস্থলে পাঠায়। কে বা কারা এই গাড়িটি পরিচালনা করে, গাড়ি দুটিরই চালকই বা কে তা খুঁজে না পেয়ে গাড়ি দুটিকে আটক করে পুলিশ।

আর এই ঘটনার পরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যে। অভিভাবকদের একাংশের আশঙ্কা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে পুলিশ ওই গাড়ি গুলিতে চিহ্নিত করতে না পারে তার জন্যই এই অভিনব পন্থা নিয়ে বেআইনীভাবে চলাচল করছে পুলকারগুলি। এক অভিভাবক বলেন, “আমরা আমাদের হৃদপিণ্ডটা এইসব অশিক্ষিত চিটিংবাজ পুলকার মালিক ও তার ড্রাইভারদের হাতে তুলে দিচ্ছি প্রতিদিন সকালে। কিন্তু আমাদের সন্তানরা সুস্থ ও সুরক্ষিতভাবে বাড়ি ফিরবে কিনা তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।”

প্রসঙ্গত, স্কুলের তরফে সমস্ত পড়ুয়াকে স্কুল বাসের পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়না। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ও শহর সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করা পড়ুায়দের অভিভাবকদের একাংশকে তাই বাধ্য হয়েই পুলকারের উপরই নির্ভর করতে হয়। যে বাসগুলি পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করে, সেগুলির তথ্য স্কুলের কাছে থাকলেও নানা জায়গা থেকে আসা এইসব পুলকারগুলির বিষয়ে স্কুলের কাছে কোনও তথ্য থাকে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই গাড়িগুলি নিয়ম মেনে চলে না। বাণিজ্যিক ভাবে গাড়ির ব্যবহার করতে হলে গাড়ির মালিককে আলাদা পারমিট নিয়ে হয়। সেই ধরনের গাড়ির জন্য বেশি কর দিতে হয়। গাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিদিষ্ট সময়ে পরিবহণ দফতরে যেতে হয়। অভিভাবকদের দাবি বেশির ভাগ গাড়ির বাণিজ্যিক লাইসেন্স নেই। সেগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষাও নিয়মিত হয় না। তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।

এদিন পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নিয়মিত পুলকারগুলির উপরে নজরদারি চালানোর আবেদন জানান অভিভাবকরা। তাদের দাবি দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন স্কুলে যেসব পুলকার চলাচল করে তাদের অবিলম্বে একটি তালিকা তৈরি করে নজরদারি চালানো হোক। যাতে ভবিষ্যতে কোনওরকম দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশ সহজেই সেই সব গাড়ির মালিকদেরকে চিহ্নিত করতে পারে। পাশাপাশি দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের কাছে তাঁরা আবেদন জানান অবিলম্বে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে চলাচল করা সমস্ত পুলকারের বৈধ কাগজপত্র ও গাড়ির ফিটনেস চেক করা হোক। যাতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকতে পারেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments