মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ– জমির মালিকই নয়, অথচ সেইসব জমির’ই স্থায়ী মালিকানা অন্যের নামে চিরস্থায়ী হস্তান্তরের ঢালাও প্রস্তাব দিয়ে এখন দারুণ ফাঁপরে রাজ্য সরকারের আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা (এডিডিএ), যা নিয়ে যেমন চাঞ্চল্য এডিডিএ’র অন্দরমহলে, তেমনি উদ্বেগ সংস্থার কাছ থেকে লিজের মাধ্যমে বাসস্থান, শিল্প কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল-রেস্তরাঁর জন্য জমি পাওয়া বাসিন্দা ও উদ্যোগপতিদের। দুই মহলেরই আশংকা – ‘কি যে হবে? আর হলেইবা কিকরে হবে, তার নির্দিষ্ট কোনো রূপরেখাই এখনো এডিডিএর হাতে নেই। তাই, ‘সুবর্ণ সুযোগ’ নাম দিয়ে লিজ-মুক্তির এই সরকারি প্রকল্প ঘটা করে বাজারে আনলেও, এডিডিএ নিজেই এখনো দিশাহারা।”
রাজ্য সরকার সম্প্রতি ‘লিজহোল্ড টু ফ্রি-হোল্ড’ নামে চুক্তি ভিত্তিক মালিকানার জমিগুলিকে চিরস্থায়ী মালিকানাধীন করে দেওয়ার একটি আইন প্রণয়ন করেছে। এর জন্য জমির লিজ হোল্ডারকে এককালীন জমির মূল্যের ৭.৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত রূপান্তর মূল্য জমা করতে হবে। রাজ্য সরকারের তরফে এডিডিএর মতো পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নগর পরিকল্পনা ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সংস্থার কাছে এই বন্দোবস্তের নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই মোতাবেকই ‘গোল্ডেন অপরচুনিটি’ নাম দিয়ে এডিডিএ তার ভবনে জমির চুক্তি ভিত্তিক মালিকদের নতুন প্রকল্পটিতে আকর্ষিত করতে ঢাউস্ বিলবোর্ড টাঙিয়ে দেয় গত মঙ্গলবার। কোনো কোনো উৎসাহী জমির মালিক ইতিমধ্যেই ছুটেও গেছেন এডিডিএর সিটিসেন্টারের সদর দপ্তরে। গিয়েও প্রায় সকলেই হতাশ হয়েছেন, শুধু পলাশডিহা সংলগ্ন সিটিসেন্টারে (ফেজ-টু)র একটি বেসরকারি পলিটেকনিকের ভাগ্যে এডিডিএর এক নতুন ‘সাহেবে’র বিশেষ কৃপায় শিকে ছিঁড়েছে মাত্র।
![](https://www.eaibanglai.com/wp-content/uploads/2023/03/ADDAFREEHOLD1-1024x576.gif)
সিটি সেন্টারের মোট ৬৩১ একর জমির একাংশেরও বৈধ মালিকানা এডিডিএর হাতে এখনো নেই। তাই, রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকা মোতাবেক, জমি প্রাপকদের ঠিক কোন উপায়ে চিরস্থায়ী মালিকানা দেওয়া যায়, তা নিয়ে গত শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি রাজস্ব)র সাথে একটি বিশেষ বৈঠকে বসেন এডিডিএর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক রাহুল মজুমদার। বৈঠকের পর মজুমদার বলেন, “আমরা গোটা বিষয়টি শুধরে নেওয়ার জন্য প্রথম পর্যায়ের একটি আলোচনা করলাম। একটি সুষ্ঠু সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। শীঘ্রই সমস্যা মিটবে বলে আমরা আশাবাদী।” অতিরিক্ত জেলা শাসক (ভূমি রাজস্ব) বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে সদর্থক কিছু করতে চেষ্টা করছি। এখন বেশি কিছু বলছি না। শুধু একটা কথা বলতে পারি – এখানে দাদুর জমি নাতি ভোগ করছে, সমস্যা তো একটা রয়েছেই।” অর্থাৎ, সমস্যা এখনো রয়েছে, সমাধান এখনো যে এডিডিএর হাতেই নেই, সেই এডিডিএ আবার আমজনতার জমি সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ফলাও করে।
প্রশ্ন আরো আছে – শত শত একরের আসল মালিকানাটাই এখনো অব্দি যখন এডিডিএর হাতে নেই, তখন সিপিএম প্রভাবিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিতে সংস্থার এক নতুন সাহেবেরই বা কিসের এত তৎপরতা? এডিডিএর চেয়ারম্যান তাপস বন্দোপাধ্যায় বলেন, “সমস্ত জমি আগে আমাদের নামে রেকর্ড করার জন্য আমরা তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছি। কি করে একটা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ ভাবে ব্যবস্থা করা হচ্ছে তা আমার জানা নেই।”ব্যাপারটা আমি বিস্তারে জানতে চাইবো।”
![](https://www.eaibanglai.com/wp-content/uploads/2023/02/add2-5-1024x576.jpg)
![](https://www.eaibanglai.com/wp-content/uploads/2023/02/add1-2-1024x576.jpg)
![](https://www.eaibanglai.com/wp-content/uploads/2023/02/ppp-1024x576.jpg)
![](https://www.eaibanglai.com/wp-content/uploads/2023/02/sanakaadd-1-1024x576.jpg)
![](https://www.eaibanglai.com/wp-content/uploads/2023/02/banglow-1-1024x576.jpg)