সংবাদদাতা পাণ্ডবেশ্বর :- বৃহস্পতিবার পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার কুমারডিহি গ্রামের তিলাবনী কোলিয়ারি সংলগ্ন একটি জঙ্গলে গাছ কাটতে এলে, গাছ কাটা রুখে দেয় গ্রামবাসীদের একাংশ।
ইসিএল-এর ঝাঁঝরা এরিয়ায় রেল করিডর হবে, আর সেই রেল করিডর এই জঙ্গলের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। এবং জঙ্গলের অধিকাংশ জায়গা ইসিএল-এর অধীন । তবে কুমারডিহি গ্রামের প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি নামে এক বাসিন্দা নিজের খরচে ও বহু যত্নে তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন এই বাগানটি । এবং এই বাগান টির সম্বন্ধে এলাকার আশেপাশে নামও আছে । রয়েছে প্রচুর প্রজাতির আম গাছ, রয়েছে বিভিন্ন রকম ঔষধের গাছ । বর্তমানে এটি গ্রামের একমাত্র সুন্দর বাগান বলে গ্রামবাসীদের মত । ইসিএল ঝাঁঝরা এরিয়ার রেল করিডর করার জন্য বাগানের গাছ কাটতে এসে বরাত দিয়েছে এক ঠিকাদারকে । এদিকে বাগানটি যিনি তৈরি করেছিলেন সেই প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি বর্তমানে মৃত। তাই তার সন্তান এই বাগান প্রসঙ্গে ইসিএল-এর পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান । মহামান্য আদালত এই বাগানটি প্রসঙ্গে স্টে অর্ডার জারি করে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ঝাঁঝরা এরিয়ার ইসিএল কর্তৃপক্ষ কিভাবে গাছ কাটার নির্দেশ দেন, প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা।
চলতি মাসেই সকলের নজর এড়িয়ে একবার ঝাঁঝরা এরিয়ার এই ঠিকাদার এই বাগান থেকে এক ট্রাক্টর গাছ কেটে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার একইভাবে ফের গাছ কাটতে এলে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ওই ঠিকাদার । গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি যদি গাছ কাটতেই হয় তাহলে আগে ইসিএলকে গাছ লাগাতে হবে । নিয়ম মোতাবেক আগে বাগান তৈরি করুক তারপরে বাগান কাটুক । কেননা কুমারডিহি গ্রামের একমাত্র সুন্দর বাগান এটা। যদিও গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ঠিকাদার গাছ কাটা বন্ধ করে দেন । গাছ কাটতে আসা ঠিকাদার জানান, ইসিএল কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তিনি গাছ কাটতে এসেছেন এবং গ্রামবাসীরাদের বাধায় তিনি গাছ কাটা বন্ধ করে দেন ও ঝাঁঝরা এরিয়ার আধিকারিকদের খবর দেন । তারা এসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসে মীমাংসা করলে তিনি তার কাজ শুরু করবেন বলে জানান। অন্যদিকে কুমারডিহি গ্রামের সন্তোষ বাগদী নামে এক ব্যক্তি জানান, কে বা কারা গাছ কাটতে এসছে তারা তাদের চেনেন না । সন্তোষবাবুর একটাই বক্তব্য একটা গাছ কাটলে চারটে গাছ লাগাতে হবে। এই বাগানটিকে তারা প্রথম থেকেই যত্ন করে আসছেন । তাই এত সহজে তারা বাগানের গাছ কাটতে দেবেন না ।
সবমিলিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে গাছ কাটা বন্ধ হয়ে যায় এদিন । যদিও এই ব্যাপারে ইসিএল-এর ঝাঁঝরা এরিয়ার এজিএম এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিষ্কার বলেন ,সংবাদ মাধ্যমের কাছে কোনরকম তথ্য দেওয়ার অধিকার তার নেই। তাহলে প্রশ্নই থেকেই যায় ঝাঁঝরা এরিয়ার ইসিএল কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করেই কি গাছ কাটার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে ?
