eaibanglai
Homeএই বাংলায়'স্বপ্নছন্দম' এর উদ্যোগে দুর্গাপুরে আয়োজিত হলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের

‘স্বপ্নছন্দম’ এর উদ্যোগে দুর্গাপুরে আয়োজিত হলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,দুর্গাপুরঃ– ‘স্বপ্নছন্দম’ মানেই দুর্গাপুরবাসীর কাছে একটা আলাদা অনুভূতি, আলাদা প্রাপ্তি। ভিন্ন স্বাদের, ভিন্ন ভাবনার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপহার দিয়ে গত বাইশ বছর ধরে ‘স্বপ্নছন্দম’ নামক আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি এলাকাবাসীর প্রাপ্তির ভাঁড়ার পূর্ণ করে চলেছে। ব্যতিক্রম ঘটলনা এবছরও।

সংস্থাটির উদ্যোগে গত ২১ ও ২২ এপ্রিল – দুইদিন ব্যাপী দুর্গাপুরের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত হয় সংস্থার ২২ তম বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। নাটক, শ্রুতিনাটক, কবিতা কোলাজ, কবিতার সঙ্গে নৃত্য, সঙ্গীত, বই প্রকাশ প্রভৃতিতে ভরপুর ছিল অভিনব এই অনুষ্ঠান। ‘স্বপ্নছন্দম’-এর নিজস্ব শিল্পীরাও ছাড়াও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে দুর্গাপুরের সোনা বিউটি থেরাপিস্ট, সুরপরিষদ, উড়ান, ইচ্ছেডানা, সুরশ্রী, ক্যামেলিয়া, সঙ্গীতায়ন এর মত একাধিক সংস্থার শিল্পীরা। দু’দিন ধরে শহরের দেড় সহস্রাধিক সাংস্কৃতিক প্রেমী মানুষ অনুষ্ঠানের রসাস্বাদন করে। দ্বিতীয় দিন ভিড় এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে সবাই বসার সুযোগ পায়নি। ‘স্বপ্নছন্দম’-এর শিল্পীদের হাতের তৈরি মঞ্চ উপস্থিত দর্শকদের প্রশংসা আদায় করে নেয়।

চিরাচরিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পরিবর্তে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। বট, অশ্বত্থ ও নিম গাছের গোড়ায় জল ঢেলে উপস্থিত অতিথিরা অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে এটা ছিল এক ভিন্ন ভাবনার লড়াই। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নবীন সঞ্চালক ও শিল্পীদের সম্মানিত করা হয়। মেমেণ্টোর পরিবর্তে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে গাছ। এখানেও আছে অভিনবত্ব ও নতুনত্ব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর মাদার হাউসের সিস্টার অমলা ও দুর্গাপুর পুরনিগমের মেয়র অনিন্দিতা মুখার্জ্জী। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে দু’জনের হাতে তুলে দেওয়া হয় গাছের চারা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও নাট্যকার আরণ্যক বসু, দিশারী মুখোপাধ্যায়, প্রণয় রায়, সূর্য মাইতি, ঋতুপর্ণা সরকার, উমাশংকর সেন, ল্যাকি চট্টরাজ, দীনবন্ধু বালিয়াল, স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায় তথা কবি ও বাচিক শিল্পী অন্তরা সিংহরায় সহ আরও অনেকেই।

ওরা এলাকার দুস্থ ও অসহায় শিশু। মঞ্চে উঠে নিজেদের সুপ্ত প্রতিভার প্রকাশ করার সুযোগ ওদের ছিলনা। দূর থেকে ওরা রঙিন পোশাক পরিহিত অন্য শিশুদের বিভিন্ন ধরনের পারফরম্যান্স দেখত আর হয়তো দীর্ঘশ্বাস ফেলত। বিষয়টি মনের মধ্যে ধাক্কা দেয় এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী কাকলি দাসগুপ্তকে। তার হাত ধরে গড়ে ওঠে ‘স্বপ্নছন্দম’- আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ছন্দের তালে তালে গত বাইশ বছর ধরে স্বপ্ন পূরণ হয়ে চলেছে এলাকার অসহায় শিশুদের।

‘স্বপ্নছন্দম’-এর কর্ণধার কাকলি দাসগুপ্ত বললেন – দুর্গাপুরের বুকে সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক বার্তার সঙ্গে সঙ্গে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে আমি এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছি। স্বপ্ন পূরণের পথে বহু বিশিষ্ট মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি। তিনি তাদের প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আগামীদিনেও প্রত্যেকের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments