নিজস্ব প্রতিনিধি, লাউদোহাঃ রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে যখন কল্পতরুর ভূমিকা নিয়েছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তখন রাজ্যের প্রথমসারির শহরগুলির মধ্যে অন্যতম দুর্গাপুরের একদম গা ঘেঁষে অবস্থিত লাউদোহা ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভয়াবহ ছবি উঠে এল এই বাংলায়-এর ক্যামেরায়। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে শুরু করে ন্যায্য মূল্যে ওষুধের দোকান, প্রসূতিদের জন্য একাধিক সুবিধাসহ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছেন তিনি। তাসত্বেও দুর্গাপুরের লাউদোহা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের যে ছবি আমাদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে তা শিউরে ওঠার মতো। সরকারী তরফে পেটি পেটি ওষুধ পৌঁছেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথচ সেই ওষুধ সংরক্ষনের কোনও ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে বারান্দায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই পড়ে রয়েছে ওষুধ। ফলে সেই ওষুধের গুণমান কতদিন ঠিক থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে লাইন দিয়ে মেঝেতে শুয়ে রয়েছেন পুরুষ ও মহিলা রোগীরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিকদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাদের কাছ থেকে জানা গেল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই কোনও বেডের ব্যবস্থা। সবথেকে আশ্চর্যের হলো পুরুষ ও মহিলা রোগীদের জন্য আলাদা কোনও ওয়ার্ড নেই। একই জায়গায় পুরুষ ও মহিলা উভয় রোগীর চিকিৎসা চলছে। শুনতে অবাক লাগলেও লাউদোহা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা এতটাই খারাপ। যেখানে মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকের ঘাটতির অভিযোগ ওঠে সেখানে এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনজন চিকিৎসক থাকা সত্বেও চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামোই নেই বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা। তাদের অভিযোগ, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপরেই নির্ভর করে রয়েছেন লাউদোহাসহ আশেপাশের একাধিক ব্লকের কয়েকশো পরিবার। যাদের বেশিরভাগেরই বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানোর কিংবা টাকা খরচ করে ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই। ফলে চরম অব্যবস্থার মধ্যেও একপ্রকার বাধ্য হয়ে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই রোগীর চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। অবিলম্বে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে প্রশাসনিক দৃষ্টি আকর্ষনের পাশাপাশি সরকারী হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়ে দ্রুত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংস্কার ও পৃথক চিকিৎসাভবনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।