eaibanglai
Homeএই বাংলায়বড় অশান্তি ছাড়াই নির্বিঘ্নে ভোট পশ্চিম বর্ধমানে

বড় অশান্তি ছাড়াই নির্বিঘ্নে ভোট পশ্চিম বর্ধমানে

সংবাদদাতা, দুর্গাপুরে ও আসানসোলঃ- বড় কোন গন্ডগোল ও অশান্তি হয়নি পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। সোমবার বর্ধমান- দুর্গাপুর ও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের দু/একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বলতে গেলে নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হলো। প্রধান বিরোধী দুই দলের তরফে এদিন ভোট নিয়ে তেমন কিছু অভিযোগ সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত করা হয়নি। শাসক দলের তরফেও এদিনের ভোট নিয়ে সন্ধ্যে পর্যন্ত তেমন কিছু জানানো হয়নি।

সাত সকালেই দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বেনাচিতির ভিরিঙ্গি স্কুলে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই এর সাথে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রাক্তন কাউন্সিলর রমাপ্রসাদ হালদার। উত্তেজনা থাকায় পুলিশ দুই পক্ষকেই এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।

দুপুর দিকে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে সকাল থেকে তৃণমূলের বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল ৷ বিজেপির পক্ষ থেকে তার প্রতিবাদ করা হলে তাদের বেশ কয়েকজন কর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ৷ এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে আমরাই গ্রাম । দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করা হয় । ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে ।

এরপর সন্ধ্যার দিকে দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভার স্টিল টাউনশিপের তানসেন রোডে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। আসানসোল জেলা বিজেপির যুব সভাপতি প্রদীপ মণ্ডল সহ মোট চার জনকে আটক করে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আসানসোল লোকসভায় সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭০.৯৩ শতাংশ ও বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভায় ৭৫.০২ শতাংশ । কমিশনের ঠিক করা সময় ছিলো সন্ধ্যে ছটা। জানা গেছে, সন্ধ্যে ছটার পরেও বেশ কিছু বুথে ভোট গ্রহণ চলে। সেক্ষেত্রে ভোট শতাংশের হার আরো সামান্য কিছু হলেও বাড়তে পারে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত আসানসোল দক্ষিণে ৬৯ শতাংশ, আসানসোল উত্তরে ৬৭.৭০ শতাংশ, বারাবনিতে ৭০.৯৫ শতাংশ, জামুড়িয়ায় ৭২.১০ শতাংশ, কুলটিতে ৭৩ শতাংশ, পান্ডবেশ্বরে ৭১.৬৬ শতাংশ ও রানিগঞ্জে ৭৩.১১ শতাংশ ভোট পড়েছে। একইভাবে, বর্ধমান দূর্গাপুরে ভোট পড়েছে ৭৫.০২ শতাংশ।

পাণ্ডবেশ্বর প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারীকে পুলিশের বাধা। পাণ্ডবেশ্বর যাবার পথে বহুলা মোডের কাছে পুলিশ তার গাড়ি আটকে দেয়।তার সঙ্গে গাড়িতে উপস্থিত ছিলেন বাপ্পা চ্যাটার্জী।প্রায় আধ ঘন্টা তার গাড়ি আটকে রাখে পুলিশ।পরে নির্বাচন কমিশনারের পাশ দেখালেও তাকে পাণ্ডবেশ্বর যেতে বাধা দেওয়া হয়।

আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার রানিগঞ্জের নতুন এগারা গ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বিবেক মন্ডল সহ কয়েকজন বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির জেলা পরিষদের প্রার্থী দীপ্তরূপ মন্ডল ও সৌরভ মন্ডল এই হামলায় আহত হয়। বিজেপির অভিযোগ, দলের পতাকা এবং ব্যানার রবিবার মধ্যরাতে পর থেকেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ছিঁড়ে দিচ্ছিল। তারা বাধা দিতে গেলেই মারধর করা হয়। পুরো বিষয়টি রাতেই নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে কিছুক্ষনের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিজেপির জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অভীক মন্ডল। তারা ঐ দুষ্কৃতিদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূলের তরফে অবশ্য গোটা বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।

অন্যদিকে আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটককে রবিবার রাতে একটি অজানা ফোন থেকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ফোনে বলা হয়েছে, বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না ।ঠিক মতো থাকুন। অভিজিৎ ঘটক নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে তিনি সোমবার সকালে জানিয়ে। তার দাবি, ঐ ফোনটি বিজেপির পক্ষ থেকে করা হয়েছে। যদিও, বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, অসত্য কথা বলা হচ্ছে। তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে যাবে।

এদিকে, কুলটির নিয়ামতপুর বাজারে ১০৮ নম্বর বুথের কাছে থাকা বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের বেঞ্চ টেবিল বুথ ক্যাম্প সরিয়ে দেয় রাজ্য পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থাকা দুই দলেরই পতাকা খোলা হয়। বিকেলের দিকে কুলটির আরো একটি বুথে গন্ডগোল হয়।

জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রের নিমসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯৯ নং বুথে বাবার সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে আসে ছেলে। ছেলে তার বাবার পরিবর্তে ভোট দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। বুথের বাইরে ছেলেকে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজেদের নাম বা অন্য কিছু জানাতে অস্বীকার করে তারা দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়।

এদিকে, ভোট শেষ হওয়ার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী এসএস আলুওয়ালিয়া বলেন, বড় কোন ঘটনার খবর পাইনি। ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমরা খবর নিচ্ছি। সবকিছু স্ক্রটিনি করা হচ্ছে। তেমন হলে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। জেলা সভাপতি বলেন, ৭৭ টি বুথে দলের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয় নি। বিজেপির তরফে সন্ধ্যে পর্যন্ত ১৬৩ টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments