eaibanglai
Homeএই বাংলায়জবর দখল....(৩)….'নতুন বামুনে'র চাপে মামড়া'র 'চিকেন বাপি'কে বাঁচাতে মুরগি হচ্ছে এডিডিএ ?

জবর দখল….(৩)….’নতুন বামুনে’র চাপে মামড়া’র ‘চিকেন বাপি’কে বাঁচাতে মুরগি হচ্ছে এডিডিএ ?

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুর:- সরকারি সংস্থার স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে এক ‘জবরদখলকারি’র হয়ে সটান মহাকুমা শাসকের দপ্তরে দরবার করে কার্যতঃ রাজ্য সরকারেরই নাক কাটলেন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আদরের ‘নয়া বামুন’ শিল্পাঞ্চলের এক বেওসায়ী। যা নিয়ে বিস্তর অস্বস্তিতে এখন রাজ্য সরকারেরই আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থা। সংস্থার অলিন্দে তাই কানাঘুষো ফিসফাস- “যাকে তাকে রাজার পাট দিলে যাত্রাপালা হয় না- হয় অযাত্রা!”

শহর থেকে জবরদখল উচ্ছেদ করার বাসনায় কোমর বেঁধেছে এডিডিএ। সেই মর্মে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সংস্থাটি বেশ কয়েক জায়গায় বিজ্ঞপ্তিও সাঁটিয়েছে। তবে, কাজ শুরু করতে পারেনি। কেন? বিলম্বটা কিসের?-সংস্থার একটি সূত্রের দাবী, সর্ষের ভেতরই যে বেশ বড়সড়ো এক ভূত বাসা বেঁধেছে, তা এবারে বেশ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এডিডিএ। এখন সেই ভূতের ‘তাণ্ডব’ ঠান্ডা করতে সংস্থার দরকার কলকাতার ‘মহাগুনিনে’র কাছে যাওয়া। কারণ, জেলা স্তরের গুনিনেরা বড়সড় ভূত দেখলে ইদানিং ‘ভূত তাড়ানো’ মন্ত্র আওড়াতে গিয়ে নাকি ভুলভাল বুলি বকছেন, শ্লোক ভুলে যাচ্ছেন। “আসলে, বারো ভূতের আড্ডা হয়ে উঠেছে এডিডিএ। বরাবরই ‘নয় কে ছয়’ বা ‘ছয়কে নয়’ করার দোষে দাগী এই এডিডিএ, এখন গত কয়েক মাসে আবার সংস্থার দুর্গাপুর অফিসে বসে যে আগন্তুকটি কলকাঠি নাড়া শুরু করেছে, তার নাকি সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে হটলাইনে যোগাযোগ। তাকে আটকাবে কেডা?”- প্রশ্ন তৃণমূল কংগ্রেসেরই শহর দুর্গাপুরের এক ডাকসাইটে নেতার। তার কথায়, “কার ঘাড়ে কটা মাথা আছে? আমরা তো শুনেছি – দিদিমনির কাছে নাকি ডাইরেক্ট সব রিপোর্ট পাঠায় এই নতুন লোকটা। এবার আবার বলছে দুর্গাপুরের নাকি মেয়র হবে। এখন ওর নামে কাঠি করলে পরে এখানে আর টিকতে দেবে?”

বিষয়টা যখন স্রেফ জবরদখল উচ্ছেদ, তখন ‘বড় ভূত’ ‘কলকাঠি’ ‘কাঠি’, ‘ঘাড়’, ‘মাথা’ -এসব অপ্রাসঙ্গিক কথা উটছেই বা কেন ?

“ওঠার কিছু সঙ্গত কারণও আছে বৈকি ? সবকিছুই আমরা কিন্তু নজরে রাখছি। জবরদখলকারির স্বার্থ রক্ষায় কে বা কারা মহকুমা শাসকের কাছে গেল, কেন গেল ? তার পিছনের বেশকিছু রহস্য এখন আমাদের কাছে খোলসা হচ্ছে। আমাদের অবাক লাগছে – কি করে একটা লোক এভাবে বুক বাজিয়ে পুরসভা, এডিডিএ- সর্বত্র ‘লুঠ ‘ চালাচ্ছে আর বাকি সবাই বসে বসে দেখছে ? এডিডিএ কি তাহলে এখন ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন সংস্থা ? আর ‘চিকেন বাপি’র যে জমির মালিকানা নিয়ে এত বিতর্ক কেন রাজ্য সরকারের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগ ও ব্লক ডেভেলপমেন্ট আধিকারিক তদন্ত করে দেখবে না ?” -প্রশ্ন জেলা বিজেপির নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কিসের ইঙ্গিত দিলেন? কেন দিলেন- এ প্রশ্নে এডিডিএ’র এক পদস্থ আধিকারিক বললেন, “আমরা কি কিছুই বুঝিনা ? কিন্তু, গত কয়েকটা মাস ধরে আমাদের সত্যি করেই আর কিছুই করার থাকছে না। চোখের সামনে দেখছি অনেক কিছুই। সরকারের ওপর মহলের প্রশ্রয়ে এডিডিএ’ র দপ্তরটাকে সত্যি সত্যি আড্ডাখানা বানিয়ে ছেড়েছেন কেউ কেউ।”

জবরদখল উচ্ছেদ প্রসঙ্গে কি শাসক দলের নেতা, কি বিরোধী দলের নেতা, কি আধিকারিক, কি এডিডিএ কর্মী – সকলের গলাতেই হতাশা আর ক্ষোভের সুর। এই সুর আরো প্রকট হয়েছে চলতি সপ্তাহে, সংস্থার ‘হুকুমদার’দের দু-মুখো সাপের নীতি প্রকাশ্যে চলে আসায়। কেউ কেউ অবশ্য শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন, তবে, কারো কারো সটান প্রশ্ন – “নতুন বামুনের মর্জি রক্ষা করতে গিয়ে শেষে মুরগী হয়ে যাচ্ছে না তো এডিডিএ ? নাহলে, শহরের ‘চিকেন বাপি’ নিয়ে সরকারি সংস্থা এতটা আলগা হয়ে যাচ্ছে কেন ? নাকি, সিটি সেন্টারের ‘বাবু’র দাপটে মামড়া বাজারে নিজের জমি বাঁচাতে বেশ ভয়ই পাচ্ছে এডিডিএ! উত্তরের অপেক্ষায় শহর দুর্গাপুর।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments