eaibanglai
Homeএই বাংলায়ছাতনার নব্বই ঊর্ধ্ব সুস্থ নিরোগ যুবকের গল্প

ছাতনার নব্বই ঊর্ধ্ব সুস্থ নিরোগ যুবকের গল্প

শুভ্রাচল চৌধুরী,বাঁকুড়া:– ভোটার কার্ড বলছে ২০২৩ সালে তাঁর বয়স ৯২ বছর। অথচ চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই। এখনও চটপটে,এনার্জিতে ভরপুর। নিজের কাজ নিজেই করেন। কানে একটু কম শোনেন। কিন্তু চোখে এখনও ভালো দেখতে পান। গড়গড় করে দিব্যি পড়ে যেতে পারেন বই। এখনও হাঁটাহাটি করেন। এই তো কিছুদিন আগে গণেশ পূজার উদ্বোধন করতে বাড়ি থেকে হেঁটেই গিয়েছিলেন। কথা হচ্ছে বাঁকুড়ার ছাতনার রামরঞ্জন দত্তের। আর যা হোক তাকে এখনও বৃদ্ধ বলা যায় না। এককথায় বলতে গেলে ৯২ বছরের নিরোগ সুস্থ যুবক।

বর্তমান সময়ে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের সাথে সাথে বেড়েছে নানা শারীরিক ব্যধি। চল্লিশ পেরোনের আগেই সুগার, প্রেসার সহ নানা অসুখে জর্জরিত হচ্ছে যুব সমাজের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জানতে ইচ্ছে করে ৯২ বছর বয়সেও কীভাবে কোনও ব্যক্তি সচল তো বটেই তার পাশাপাশি সুস্থ ও নিরোগ থাকতে পারেন। এর রহস্য উদ্ঘাটন করলেন রামরঞ্জন দত্ত নিজেই। রামরঞ্জনবাবুর মতে খাবারই হল বিষ। যত কম খাওয়া যায় তত সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করা যায়। গত প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে একাহারী পালন করে আসছেন তিনি। মানে সারা দিনে একবারই পেটভরে খাবার খান। তবে খাবার নিয়ে কোনও বাছবিচার নেই তাঁর, মাছ মাংস শাক সবজি সবই খান। পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রমকেও সুস্থ থাকার চাবিকাঠি বলে মনে করেন রামরঞ্জনবাবু। তাঁর মতে আগে মানুষকে জীবন ধারণের জন্য অনেক কায়িক পরিশ্রম করতে হতো। অনেক দূর দূর হাঁটতে হতো। তিনি নিজেও সিনেমা দেখার জন্য ছাতনা থেকে বাঁকুড়া শহরে হেঁটেই যেতেন বলে জানালেন। ছাতনা থেকে বাঁকুড়া শহরের দূরত্ব কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার।

বর্তমান সময়ে বিজ্ঞানের বদান্যতায় সুইচ টিপলেই হাতের কাছে সব হাজির। মোবাইলের টাচ স্কিনের স্পর্শেই বাজার হাট থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কের কাজ কিংবা বিল মেটানো যায়। এমনকি মোবাইল অ্যাপের সাহায্যে খাবার পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে ঘরের দোরগোড়ায়। পৌঁছে যাচ্ছে যাতায়াতের জন্য গাড়ি। এই উন্নত মানের জীবন যাত্রা মানুষের জীবন থেকে কায়িক পরিশ্রম কেড়ে নিয়ে উপহার দিয়েছে শারীরিক আরাম। কিন্তু আরামের পরিবর্তে ছিনিয়ে নিয়েছে সুস্থতাও। এই উন্নত জীবনধারাকে সুস্থ জীবনধারা বলে মানতে নারাজ রামরঞ্জন দত্তের মতো নব্বই ঊর্ধ্ব যুবকেরা। তাঁদের মতে উন্নত টেকনলোজির সাহায্য় নিয়ে আসলে আমরা অসুস্থ জীবন যাবন করে চলেছি। শৃঙ্খলাহীন অলস জীবন যাত্রাই রোগাক্রান্ত অসুস্থ জীবনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments