নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ এমনিতেও সারা বছরে অবহেলাতেই পড়ে থাকেন তাঁরা। অর্থাৎ দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতিকৃতি। তাঁদের জন্মদিন কিংবা বিশেষ কোনও দিন ছাড়া এমনিতে তাঁদের প্রতিকৃতির দিকে সচরাচর নজর যায় না আমাদের। কিন্তু শনিবার ৭০ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনেও ব্রাত্য থেকে গেল দুর্গাপুরের স্টীল টাউনশিপে স্থাপিত পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর প্রতিকৃতি। সম্মান জানানো তো দূরের কথা, সামান্য ফুলের মালাটুকুও এদিন জুটল না স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতিতে। একজন দুর্গাপুরবাসী হিসেবে বলতেও লজ্জা লাগে। অথচ এই প্রতিকৃতি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই রয়েছে দুর্গাপুর ইস্পাত কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ক্লাব হাউস। আর এবছর দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার রজত জয়ন্তী উপলক্ষ্যে গত ২৪শে জানুয়ারি রাতে বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের তরফে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে খাওয়া-দাওয়ার এলাহি আয়োজন থেকে শুরু করে ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইস্পাত স্মারক উদযাপন সবকিছুই ছিল একদম পিকচার পারফেক্ট। শুধু তাই নয়, দিন কয়েক আগেই বিপুল অর্থব্যয়ে ওই ইস্পাত স্মারক রোটারিকে ঢেলে সাজিয়েছে ইস্পাত কর্তৃপক্ষ। যদিও তা নিয়ে খুব একটা মাথাব্যাথা নেয় দুর্গাপুরবাসীর। কারণ সংস্থার নিজস্ব জায়গা হিসেবে নিজ খরচে তারা তা করতেই পারেন। কিন্তু একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রতিকৃতি যখন ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতিস্থাপন করেছেন, সেক্ষেত্রে তাঁকে নূন্যতম সম্মান প্রদর্শন করাটাও কি কর্তৃপক্ষের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না? দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসেও তাঁর প্রতিকৃতিতে একটা শুকনো গাঁদা ফুলের মালা পড়ানো অবস্থাতেই থেকে যাবেন তিনি? একজন স্বাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে এর থেকে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, প্যারেড সবকিছুই হল, কিন্তু ৭০তম এই গণতন্ত্র দিবসে ব্রাত্যই থেকে গেলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু।