eaibanglai
Homeএই বাংলায়এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের জের, রানীগঞ্জে হদিশ অবৈধ বাজি কারখানার, গ্রেফতার ২

এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের জের, রানীগঞ্জে হদিশ অবৈধ বাজি কারখানার, গ্রেফতার ২

সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর রাজ্যে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে চলা বাজি কারখানাগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। সেই মতো রাজ্যের পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের ছয় দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরই শুক্রবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আতশবাজি কারখানাগুলিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়। রাজ্যজুড়ে চলা এই ধরপাড়ক কর্মসূচি চলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানীগঞ্জেও। শুক্রবার রানীগঞ্জের বক্তার নগরে বাজি তৈরিরর দুটি কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযোগ কোনওরকম অনুমতি বা লাইসেন্স ছাড়াই ওই কারখানাগুলিতে চলছিল বাজি তৈরির কাজ। এদিনের অভিযানে অবৈধ বাজি কারখানা চালানোর অভিযোগে বাবলু মালাকার ও গুরুদাস মালাকার নামের দুই ব‍্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় ১৮ কিলো বারুদ ও ১৫ কিলো বাজি তৈরির সরঞ্জাম। শনিবার ধৃত ওই দুজনকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামে একটি অবৈধ বাজি কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৮ জনের। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। পরে গত শুক্রবার ওড়িশার কটকের এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় বাজি কারখানার মালিক তথা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুর। ওই দিনই কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় রবীন্দ্রনাথ মাইতি ও পিঙ্কি মাইতি নামে আরও দুজনের।

উল্লেখ্য এগরার ওই বিস্ফোরণকাণ্ডের পর তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। খোদ উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে রাজ্যের তদন্তাকারী সংস্থা সিআইডি। তদন্তে নেমে সিআইডি আধিকারিকরা জানতে পারেন ঘটনার মূল অভিযুক্ত তথা বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ বিস্ফোরণের সময় গুরুতর জখম হন। তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়। সেই অবস্থায় তাকে তার ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগ এবং ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগক বাইকে করে প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দূরে ওড়িশার কটকে নিয়ে গিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে কটক পুলিশ খবর পেয়ে রাজ্য পুলিশকে জানালে বৃহস্পতিবার বিকেলেই কটকে গিয়ে অভিযুক্ত ভানুকে গ্রেফতার করে সিআইডি। কিন্তু শুক্রবার ভোরে হাসাপাতেল চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তার। ভানুর পাশাপাশি তার ছেলে সঙ্গী পৃথ্বীজিৎ বাগ এবং ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। যদিও ভানুর স্ত্রীর এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি।

অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে নিজেদের ফাঁকা জমিতে ঘর তৈরি করে অবৈধ বাজি কারখানা চালাত ভানু। এলাকাবাসীর দাবি, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাজি তৈরির কারবার চালাচ্ছিলেন ভানু। তার তৈরি বাজির চাহিদাও ছিল বিপুল। স্থানীয়দের মতে প্রথমে ভানুর কারখানা ছিল গ্রামের বাড়িতে। সেখানে ১৯৯৫ সালে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। সে বার পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০০১ সালে ফের বিস্ফোরণ কেড়ে নেয় ভানুর ছোট ভাই বিষ্ণুপদ বাগ-সহ তিন জনের প্রাণ। তার পরে ধরাও পড়েছেন ভানু। কিন্তু জামিন পেয়ে ফের শুরু করেন কারবার। কোনও রকম অনুমতি বা লাইসেন্স ছাড়াই এলাকায় রমরমিয়ে চলছিল তার বাজির কারবার।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments