নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– প্রতি বছর মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশীতে বিশেষ রূপে পূজিতা হন মা কালী। যা রটন্তী কালীপুজো নামে পরিচিতি। সারা বছর অমাবস্যায় মায়ের বিশেষ পুজো হলেও শুধুমাত্র এই পুজোই হয় চতুর্দশীতে। এই দিন দক্ষিণেশ্বর থেকে কালীঘাট বিভিন্ন স্থানেই মায়ের বিশেষ আরাধনার আয়োজন করা। এবছর ২০ জানুয়ারি পড়েছে এই পুণ্য তিথি। এদিন মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে রটন্তী কালীর পুজো। এবছর চতুর্দশী তিথি শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল ৯টা ৫৯ মিনিট থেকে এবং শেষ হবে ২১ জানুয়ারি শনিবার ভোর ৬টা ১৭ মিনিটে।
সারা বাংলা জুড়েই এইদিন বিশেষ রূপে পূজিত হন মা। এর মধ্যে অন্যতম দুর্গাপুরের গোপালমাঠের ব্যানার্জী বাড়ির রটন্তী কালী পুজো। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই পুজো এবছর ১২৮ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। পরিবার সূত্রে জানা যায় ব্যানার্জী পরিবারের পূর্ব পুরুষ জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জীর হাত ধরেই এই পুজো শুরু হয়। বংশ রক্ষার্থে গুরুর নির্দেশে তিনি এই পুজোর প্রচলন করেন, যা আজও ঐতিহ্য ও পরম্পরার সঙ্গে পালন করে চলেছেন ব্যানার্জী পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম।
পরিবারের বর্তমান সদস্য অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্য়ের কাছ থেকে জানা গেল আগে প্রতি বছর মূর্তি তৈরি করে মায়ের পুজো হলেও বর্তমানে ব্যানার্জী বাড়ি সংলগ্ন মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত মূর্তিতেই মা পূজিত হন। মন্দিরে মায়ের নিত্যসেবা হলেও রটন্তী কালীপুজোর দিন মায়ের পুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়। জানা যায় এই ব্যানার্জী বংশেরই ছেলে ভূতনাথ ব্রহ্মচারী, যিনি প্রখ্যাত মোহনানন্দ ব্রহ্মচারীর সাধক শিষ্য় ছিলেন, তিনিই মায়ের মূর্তি স্থাপন করে যান। তিনদিন ধরে চলা পুজোয় আগে ছাগল বলির প্রচলন থাকলেও ভূতনাথ ব্রহ্মচারীর নির্দেশেই সেই প্রচলন বন্ধ হয়। আগে জাঁকজমক ধুমধাম করে পুজোর পাশাপাশি শয়ে শয়ে মানুষের ভোগের ব্যবস্থা করা হতো। এখন আর সেই জাঁকজমক না থাকলেও ঐতিহ্য়-রীতিনীতি মেনে আন্তরিকতার সঙ্গে মায়ের পুজো করে চলেছেন ব্যানার্জী পরিবারের বর্তমান সদস্যরা।